পদ্মার ভাঙনে হুমকিতে রাজবাড়ীর ৩ ইউনিয়ন
আশরাফুল ইসলাম, রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
পদ্মা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজবাড়ীতে ভাঙন শুরু হয়েছে । এতে করে জেলা সদরের ৩ ইউনিয়ন বরাট, দাদশী ও মিজানপুর হুমকির মুখে রয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সদর উপজেলার উড়াকান্দা লালগোলা এলাকায় পদ্মার ভাঙনে গত এক সপ্তাহে প্রায় ১০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। সেই সঙ্গে ফসলি জমি, রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে হুমকির মুখে। যেকোনো সময় তিন ইউনিয়নের কয়েকশ’ মানুষের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
তাছাড়া মিজানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৌলতদিয়ার চাঁনখান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কেকেএস শ্রমজীবী বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও রয়েছে হুমকির মুখে।
পদ্মার ভাঙনের হুমকিতে থাকা উড়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা বাবু মন্ডল বলেন, যেভাবে নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন দেখা দিয়েছে তাতে মনে হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যেই আমাদের ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে যাবে।
মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেদায়েত কবির জানান, জরুরি ভিত্তিতে যদি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয় তাহলে এই বিদ্যালয়টি যেকোনো সময়ে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
মিজানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান জানান, যেভাবে নদী ভেঙে মানুষের ঘর-বাড়ি বিলীন হচ্ছে তাতে একসময় এই ইউনিয়ন মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। যত দ্রুত সম্ভব সরকারের সহযোগিতা আমরা কামনা করছি।
রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী জানান, রাজবাড়ীর তিনটি ইউনিয়ন মারাত্মক হুমকির মাঝে রয়েছে। নদী ভাঙনরোধে এরই মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন কবলিত এলাকায় প্রায় ২০০মিটার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। অতি দ্রুত আরো জিও ব্যাগ ফেলানো হবে।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলী জানান, আমি কয়েক দিন হলো এখানে যোগদান করেছি। এরই মধ্যে আমি নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছি।
রাজবাড়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল জব্বার জানান, নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙনের হাত থেকে এলাকা রক্ষার জন্য পরিষদের পক্ষ থেকে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে এখানে পর্যাপ্ত অর্থের প্রয়োজন।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকোশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার জানান, নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্যে ইতিমধ্যে ২০০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলানো হয়েছে। ভাঙনের হাত থেকে এই এলাকাকে রক্ষা করার জন্যে সব ধরনের সহযোগিতা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ভাঙনের ভয়াবহতা তুলে ধরে সহযোগিতার জন্যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাই